1. admin@jugernarayanganj.com : jugernaraya nganj nganj : jugernaraya nganj nganj
  2. multicare.net@gmail.com : যুগের নারায়ণগঞ্জ :
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন

‘মানুষ মাইরে কান্দে না, আমার সিঙ্গারা খাইয়া কান্দে’

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

যুগের নারায়ণগঞ্জ:
‘মানুষ মাইরে কান্দে না, আমার সিঙ্গারা খাইয়া কান্দে’। কথাটা মোল্লা ভাইয়ের সিঙ্গারার দোকানের মালিক মো. ইমান হোসেনের। দোকানের সিঙ্গারার স্বাদ বোঝাতেই তার এমন প্রবাদ। প্রতিদিনই তার নাগা সিঙ্গারার দোকানে কান্না করতে ভিড় জমান ঝাল প্রেমী মানুষ। কেউ কেউ স্বাদ নেওয়ার জন্য ৫-৬টা সিঙ্গারা অর্ডার দেন। খেয়ে ভালো লাগলে ১৫-২০টার নিচে সিঙ্গারা অর্ডার করেন না। দাম মাত্র পাঁচ টাকা।

২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পুল থেকে জালকুড়ি পর্যন্ত একটি দৃষ্টি নন্দন সড়ক নির্মাণ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। সড়কের দুপাশে গাছ আর সৌন্দর্যের কারণে ধীরে ধীরে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়। ছুটির দিনগুলোতে এই সড়কে থাকে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এরই ধারাবাহিকতায় ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট আর ছোট ছোট স্ট্রিট ফুডের দোকান গড়ে ওঠে এই সড়কের দুই পাশে।

এই সড়কে মোল্লা ভাইয়ের নাগা সিঙ্গারার দোকানের জনপ্রিয়তা রয়েছে বেশ। স্ত্রী আর ৪ জন সহযোগী নিয়ে বিকেল ৪টা থেকে রাতের ১২টা পর্যন্ত নাগা সিঙ্গারা বিক্রি করেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. ইমান হোসেন। ঝাল প্রেমী মানুষদের জন্য ২০১৯ সালে ঢাকার মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনের সামনে বিক্রি শুরু করেন নাগা সিঙ্গারা। এরপর দিন দিন বাড়তে থাকে তার সিঙ্গারার জনপ্রিয়তা। ব্যবসার পরিধিও বাড়তে থাকে। তবে ২০২১ সালের করোনা মহামারীর লকডাউনের সময়ে স্ত্রী আর একমাত্র কন্যা সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এরপরের বছর ২০২২ সালে চলে আসেন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায়। আবার শুরু করেন নাগা সিঙ্গারার ব্যবসা। এখানেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে তার নাগা সিঙ্গারার। ছুটির দিনগুলোতে মানুষের চাপ বেশি থাকায় বেশ হিমশিম খেতে হয়।

দৈনিক কী পরিমাণ সিঙ্গারা তৈরি করেন এমন প্রশ্নে ইমান আলী বলেন, আলহামদুলিল্লাহ অনেক সিঙ্গারা বানাই। তবে কি পরিমাণ বানাই তা আমি শিওর করে বলতে পারছি না। প্রতিদিনই মানুষ আমার এখানে ভিড় করে সিঙ্গারা খেতে। মানুষ মাইরে কান্দে না তবে আমার সিঙ্গারা খাইলে ঠিকই কান্দে। আমার কাছে খুবই ভালো লাগে যখন মানুষ আমার সিঙ্গারার জন্য লাইন ধরে। সিঙ্গারা খেয়ে ঝালে হাসফাস করে। কিন্তু এরপরও আবার অর্ডার দেয়। কেউ কেউ আরও ঝাল দিতে বলে। তবে পরিমাণ মতো ঝাল দেওয়াই ভালো। এর বেশি ঝাল দিলে কেউ খেতেই পারবে না। আমার ইচ্ছা আমার দোকানটা আরও বড় করব। কাস্টমারদের পর্যাপ্ত জায়গা আর পরিবেশ দিতে পারছি না। ভালো পরিবেশে বসে খেতে পারলে সিঙ্গারাটা মানুষের কাছে আরও ভালো লাগতো।

সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আদনান খান বলেন, নাগা সিঙ্গারা এত পরিমাণ ঝাল যা চিন্তাও করার মত না। কিন্তু ঝাল হইলেও অনেক মজার। মূলত এটা হচ্ছে একটা বরিশালের খাবার। বরিশালের মানুষ ঝাল বেশি খায়। তারা সিঙ্গারার সঙ্গে ঝালটা বেশি খায়, এটা আমি নিজে এক্সপেরিয়েন্স করেছি। নাগা সিঙ্গারার আইডিয়াটা এখন বরিশাল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। মোল্লা ভাইয়ের সিঙ্গারার সঙ্গে যে সসগুলো দেয় সেগুলোও খুব চমৎকার। আর সসগুলোও খুব ঝাল থাকে। সিঙ্গারা আর সসের ঝাল মিলিয়ে মুখে যেন একটা ব্লাস্ট হয়। যা অন্যরকম একটা শিহরণ তৈরি করে।

বন্দর থেকে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসা জাহিদুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, মোল্লা ভাইয়ের দোকানে আসছি নাগা সিঙ্গারা খাইতে। এখন ঝালে আমার নাক-চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে। প্রচুর ঝাল। কিন্তু ঝাল হলেও একটা দুইটা সিঙ্গারা খেয়ে মন ভরে না। আমি একাই কমপক্ষে ১০-১২টা সিঙ্গারা খাই। সিঙ্গারাটা খেতেও খুব মজাদার। আমি প্রায়ই এখানে নাগা সিঙ্গারা খেতে আসি।

তার সঙ্গে ঘুরতে আসা আরেক বন্ধু হাসিবুর রহমান বলেন, এখানে আসছি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে। তারা বলল, এখানে নাগা সিঙ্গারা পাওয়া যায়। তাই খেতে আসলাম। এত ঝাল! বলার বাইরে! এখনো টিস্যু দিয়ে নাক মুছতেসি। তবে সিঙ্গারাটা ঝাল হলেও যত খাচ্ছি ততই ভালো লাগছে, এমন একটা ব্যাপার।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট